আমি আর্থিক সজিব। আমার বাড়ি মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে । গ্রামের অতি সাধারণ ছেলে আমি, আমার পক্ষে জাতীয় পর্যায়ে কোন কিছু করাটা অনেক কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং ছিলো। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমার প্রবল আগ্রহ ছিল জীবনে এমন কিছু করা যাতে আমার ও দেশের মানুষের উপকার হয়। বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধান নিয়ে লেখালেখি ও ভিডিও ধারন করে মানুষকে জানাতে ইচ্ছে হত। কিন্তু অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। নিজের ক্যামেরা ছিলো না, তাই গ্রামের বন্ধুর স্টুডিওর দোকান দুপুরের সময় যখন বন্ধ থাকত, তখন তার কাছ থেকে সনি ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ২-৩ ঘন্টার জন্য চেয়ে নিয়ে কাজ করতাম। এভাবে শর্টফিল্ম তৈরী করে আমি সেই সময় ন্যাশনাল অ্যওয়ার্ড পেয়েছিলাম। অনেকেই তাদের মেধাকে সফল করার জন্য সামনে প্রতিবন্ধকতাগুলো কারণ হিসেবে দেখায়, এরপর সুযোগ-সুবিধার আশায় বসে থাকে, কিন্তু আমি থাকিনি । আমি লেখালেখি করার জন্য, লেখালেখি শেখার জন্য ভালো ভালো লেখকের বই পড়তাম । ঢাকায় এসে ৪ মাস অনেক খোঁজা খুজির পর কণ্ঠশিল্পী তাহসান ভাই এর সাথে দেখা করি এবং আমার লেখা দেখায়। তাহসান ভাই সেই সকল লেখা দেখে খুব পছন্দ করেন এবং সেগুলো নিয়ে গানের কাজ শুরু করেন । এরপর আরও অনেক সংগ্রাম করে টিভি নাটক-টেলিফিল্ম পরিচালনা করি। নাটক-টেলিফিল্ম লেখা লেখির কাজ শুরু করি। কিন্তু সমস্য হয়ে ওঠে যে আমি আমার চিন্তাশক্তিগুলো নিজের মত করে উপস্থাপন করতে পারছিলাম না, কারন টিভিতে অনেক নিয়ম কানুন ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করতে হয়। যেহেতু আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাইকোলজির ছাত্র ছিলাম এবং বর্তমানে একজন সাইকোলজিস্ট সেহেতু আমি চাইতাম এমন কিছু লিখব বা ভিডিও বানাব যা মানুষ চরম মজা নিয়ে দেখবে এবং তা দেখে তাদের মন-মানসিকতা ও সামাজিক সমস্যাগুলোর পরিবর্তন হবে। কিন্তু টিভিতে কাজ করে তা সেইভাবে পারছিলাম না। অন্যদিকে নিজেকে প্রকাশ করার জন্য ইউটিউব বিশ্বব্যাপি বিকল্প স্বাধীন মাধ্যম হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়ায় আমি প্রাংক কিং ইন্টারটেইনমেন্ট নাম দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলে ইউটিউবকে কাজে লাগাতে শুরু করি। আমার কাজ ব্যাপক ভাবে মানুষ পছন্দ করা শুরু করে যার ফলে ২০১৬ সালে কাজ শুরু করে মাত্র দেড় বছরের মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে রেজিস্ট্রেশন করা ইউটিউব চ্যানেল্গুলোর মধ্যে আমার চ্যানেল সেরা ইউটিউব চ্যানেল হয়ে যায়। ফেসবুক ও ইউটিউব মিলে আমার ভিডিও ৬ কোটি ভিউ হয়েছে। আমার কথা ৬কোটি বার মানুষের শুনেছে ভাবতেই ভালো লাগে। বাংলাদেশের বড় বড় টিভি চ্যানেল, পত্রিকা আমার ইন্টারভিউ নিতে আগ্রহ দেখায়। ঢাকার অনেক স্কুল–কলেজ আমাকে তাদের শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ডাকে। আমার জীবনের এই অর্জন অনেকের কাছে হয়ত তেমন কিছু না, তবে আমার কাছে এটা ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু করার অনুপ্রেরণা। তাই এই অর্জনের জন্য আমি সৃস্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। আমার পিতামাতাসহ নিজ জেলা মেহেরপুরের মানুষ ও সকল বন্ধুদের দোয়া ছাড়া এই অর্জন অসম্ভব ছিলো।
বর্তমানে আমি একটি প্রডাকশন হাউজ করেছি । একটি ব্রান্ড প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আমার অফিসে শতাধিক কর্মী নিয়োজিত আছে । দেশের বড় বড় মিডিয়া কোম্পানি গুলোকে নিয়মিত প্যাকেজ নাটক অ ওয়েব সিরিজ নির্মান করে দিচ্ছি ।
আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আর এগিয়ে যেতে চাই ।